প্রকাশিত: Thu, Feb 1, 2024 11:35 AM
আপডেট: Sat, May 10, 2025 10:03 AM

তিন মামলায় ২৭ বছরের দণ্ড

[১]এবার তোশাখানা মামলায় স্ত্রীসহ ইমরান খানের ১৪ বছরের কারাদণ্ড [২]১০ বছরের জন্য রাজনীতিতে নিষিদ্ধ

ইমরুল শাহেদ: [৩] ইসলামাবাদের জবাবদিহিতা আদালত (অ্যাকাউন্টিবিলিটি কোর্ট) বুধবার এই কারাদণ্ড দিয়েছেন। পাশাপাশি প্রত্যেককে ৭৮ কোটি ৭০ লাখ রুপি জরিমানা করেছেন আদালত। রাষ্ট্রীয় উপহার বেআইনিভাবে বিক্রির মামলায় তাকে এই কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবি বিভিন্ন দেশ থেকে ১০৮টি উপহার পেয়েছেন। সূত্র: ডন

[৪] এটি তৃতীয় মামলায় ইমরানের সাজা। এই রায়ের একদিন আগে রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ফাঁসের মামলায় তাকে এবং পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মেহমুদ কোরেইশীকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গত ৫ আগস্ট তোশাখানার অপর একটি মামলায় তাকে তিন বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। সেই রায়ে তিনি বর্তমানে সাজা ভোগ করছেন।

[৫] আদিয়ালা কারাগারে রায় পড়ার সময় ইমরান খান উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না বুশরা বিবি। রায়ে জেল-জরিমানা ঘোষণার পাশাপাশি ইমরান খানকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ১০ বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছেন আদালত। 

[৬] পিটিআই এই রায়কে ‘আইনের সম্পূর্ণ ধ্বংস’ বলে অভিহিত করেছে। দলটি বলেছে, দুই দিনের রায়ে দেশের চলমান আইনকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। দলের এক্স পোস্টে বলা হয়েছে, ইমরান খান ও তার স্ত্রী ক্যাঙ্গারু বিচারের মুখোমুখি হয়েছে, যেখানে আত্মরক্ষার কোনো সুযোগ ছিল না। 

[৭] জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইমরান খান আদালতকে বলেছেন, এখানে বুশরা বিবির কিছু করার নেই। তাকে জোর করে মামলার অংশ করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, আমাকে শুধু রায় শোনার জন্য ডাকা হয়েছে। আমি প্রতারিত হয়েছি।  

[৮] আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পার্লামেন্ট নির্বাচন হবে পাকিস্তানে। পুলিশী অভিযান ও মামলায় দিশেহারা ইমরানের রাজনৈতিক দল পিটিআই।  প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচার চালাতে গিয়ে পদে পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) ও আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে নির্বাচনে দলের প্রতীক ক্রিকেট ব্যাটও ব্যবহার করতে পারছেন না তারা। এই পরিস্থিতির মধ্যেই তড়িঘড়ি করে এ রায় এলো।

[৯] দুর্নীতি, রাজনৈতিক দাঙ্গায় উস্কানি, সামরিক বাহিনীর স্থাপনায় হামলাসহ কয়েক ডজন মামলার আসামি ইমরান খান বর্তমানে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের আদিয়ালা কারাগারে বন্দি আছেন। সেই কারাগার চত্বরেই বসেছিল জবাবদিহিতা আদালতের এজলাস। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব

রাশিদুল ইসলাম: [২] পুরো নাম ইমরান আহমেদ খান নিয়াজি। জন্ম ২৫ নভেম্বর ১৯৫২ সাল। তবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তারা ভুল তথ্য দেওয়ায় পাসপোর্টে ইমরানের জন্ম তারিখ ওঠে ৫ অক্টোবর, ১৯৫২ সাল। পাকিস্তানের একজন কিংবদন্তী ক্রিকেটার অতঃপর পাকিস্তানের  রাজনীতিবিদ থেকে ক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছে এই প্রাক্তন ক্রিকেটার ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত দেশটির ২২তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

[৩] একটি সাংবিধানিক সংকটের মধ্যে, খান এপ্রিল ২০২২-এ অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে পদ থেকে অপসারিত হওয়া পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। একই বছরের আগস্টে, পুলিশ এবং বিচার বিভাগকে একজন সহযোগীকে আটক ও নির্যাতন করার অভিযোগ করার পর তাকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। অক্টোবরে তোশাখানা রেফারেন্স মামলার বিষয়ে, খানকে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের বর্তমান মেয়াদের জন্য দায়িত্ব  গ্রহণের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করে। নভেম্বরে, তিনি পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদে একটি রাজনৈতিক সমাবেশের সময় তাকে একটি হত্যা প্রচেষ্টা থেকে বেঁচে যান।

[৪] গত বছর ৯ মে খানকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। সর্বশেষ একটি কূটনৈতিক সাইফার মামলাসহ অন্যান্য মামলায় ২৭ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব